রায়পুরায় দুই কলেজ ছাত্রী অপহরণ, কিশোর অপরাধী গ্যাং এর তিন সদস্য গ্রেপ্তার
নিজস্ব সংবাদদাতা : নার্সারী থেকে গাছের চারা কিনতে গিয়ে দুই কলেজ ছাত্রী অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় কিশোর গ্যাং লিডারসহ অপরাধী চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে দুই কলেজ ছাত্রীকে।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার হাসনাবাদ বাজার এলাকা থেকে দুই কলেজ ছাত্রীকে ভয় দেখিয়ে অপহরণ করে দুর্বত্তরা।
গ্রেপ্তারকৃত অপহরণকারীরা হলো-রায়পুরা উপজেলার হাসনাবাদ স্কুলপাড়া এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে শাহাদৎ (১৮), করিমগঞ্জ গ্রামের শহিদ কাজীর ছেলে মোঃ মুন্না কাজী (১৮) ও আমির হোসেন ভূইয়ার ছেলে মৃদুল ভূইয়া (১৮)।
নরসিংদী জেলা পুলিশের মিডিয়া সমন্বয়ক ও গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর রুপন কুমার সরকার পিপিএম জানান, সোমবার (১৯ অক্টোবর) বিকালে স্থানীয় দুই কলেজছাত্রী হাসনাবাদ পশ্চিম বাজারস্থ একটি নার্সারীতে গাছের চারা কিনতে যায়। এসময় কথিত কিশোর গ্যাং লিডার সাহাদাত ও রাতুলের নেতৃত্বে নাসির, রাতুল, তানিম, আইমিন, রোহান ও মোজাম্মেল দেশিয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ওই দুই ছাত্রীকে ইজিবাইকে করে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে অপহৃতদের পরিবারে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অন্যথায় দুই ছাত্রীর জীবন নষ্ট করে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। উপায় না দেখে পরিবারের লোকজন বিকাশে ২১ হাজার টাকা মুক্তিপণ পাঠালেও তারা আরও টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে।
এ ঘটনার পর ওই দিনই পরিবারের লোকজন ৯৯৯ এ কল করাসহ নরসিংদীর পুলিশ সুপার এর নিকট অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এর উপ পরিদর্শক জাকারিয়া আলম ও রায়পুরা থানা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় যৌথ অভিযান শুরু করে। পুলিশী অভিযান টের পেয়ে অপহরণকারীরা সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রায়পুরা থানাধীন নীলকুঠি মোল্লা বাড়ি এলাকায় দুই কলেজ ছাত্রীকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় পুলিশ দুই ছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারলেও অপহরণে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এদিকে হাসনাবাদ বাজারের একটি দোকানের বিকাশ নাম্বারে মুক্তিপণের টাকা নেয়া হলেও রাতে দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অপহরণকারীরা টাকা তুলতে পারেনি। পরদিন মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) সকালে বিকাশের দোকান থেকে মুক্তিপণের টাকা উত্তোলন করতে গেলে অপহরণে জড়িত মুন্না ও মৃদুলকে আটক করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যমতে সাহাদাত কে আটক করা হয় এবং অপহরণের কাজে ব্যবহৃত ইজিবাইক উদ্ধার ও মুক্তিপণের ২০ হাজার ৮ শত টাকা উদ্ধার করা হয়।
জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এর উপ পরিদর্শক জাকারিয়া আলম বলেন, এ ঘটনায় অপহরণের শিকার এক ছাত্রীর ভাই বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিজ্ঞ আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হবে।