নরসিংদী জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
বাণী রিপোর্ট : নরসিংদী জেলা প্রশাসনের কঠোর নজরদারী ও সামাজিক সচেতনতায় জেলাব্যাপী বাল্যবিবাহ হ্রাস পেয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার একটি বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দুটি অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুর জীবনকে বাল্য বিবাহের অভিশাপ থেকে মুক্ত করা হয়েছে।
সোমবার (২০ জুলাই) বিকেলে নরসিংদী জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইনের সার্বিক নির্দেশনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাখাওয়াত জামিল সৈকত উপস্থিত হয়ে “বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা” করে বাল্য বিবাহ বন্ধ করেন।
জানা যায়, নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের মোঃ সুলমান মিয়ার অপ্রাপ্ত বয়স্কা কন্যার সাথে শিবপুর উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের মোঃ রফিকুল ইসলাম এর অপ্রাপ্ত বয়স্ক পুত্রের বাল্যবিবাহ সম্পন্ন হচ্ছে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন নরসিংদী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
এসময় বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। আইনের ৮ ধারার অপরাধ সংঘটিত হওয়ায় এবং বর-কনের অভিভাবকগণ অপরাধ স্বীকার তাদের অর্থ দণ্ড প্রদান করে বাল্যবিবাহ বন্ধ করেন ভ্রাম্যমান আদালতের বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাখাওয়াত জামিল সৈকত ।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় চিনিশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ মুরাদ হোসান এবং আইয়ুবপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার বাদল ভূইয়া এবং এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। বাল্যবিবাহ রোধে জেলা প্রশাসনের এ ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাখাওয়াত জামিল সৈকত জানান, বিবাহ একটি ধর্মীয়, সামাজিক ও সরকার স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান। তবে বাল্যবিবাহ একটি ফৌজদারি ও সামাজিক অপরাধ। বাল্যবিবাহের কুফল দীর্ঘমেয়াদী। বাল্যবিবাহ হলে মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু ও নারী নির্যাতনের হার বৃদ্ধি পায়।
প্রশাসনের কঠোর নজরদারি আর আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কারণে বাল্যবিবাহের হার হ্রাস পাচ্ছে। ফলে উন্নয়ন লক্ষ্যামাত্রা (এমডিজি) এবং টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ প্রত্যাশিত সফলতা লাভ করছে।
তিনি আরো জানান, নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন এঁর দূরদৃষ্টির কারণে নরসিংদী জেলায় বাল্যবিবাহ রোধে তৈরি হয়েছে ত্রিমাত্রিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা। প্রশাসনের নেতৃত্বে সামাজিক সংগঠন ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বিত সহযোগিতায় জেলায় প্রত্যন্ত অঞ্চলেও বাল্যবিবাহ রোধে চলমান আছে কঠোর নজরদারি।