বাংলাদেশে প্রথম তৈরি করোনার টিকা গরিব মানুষও কিনতে পারবে
বাণী ডেস্কঃ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ রোগের টিকা আবিষ্কার করার দাবি করেছে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড। বুধবার (১ জুলাই) প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।
গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের আবিষ্কার করা টিকা দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষেরও নেওয়ার সক্ষমতা থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অপারেশন্স ম্যানেজার ও ইনচার্জ এবং গবেষক দলের সদস্য মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। টিকা আবিষ্কারের বিস্তারিত বিষয় নিয়ে দেশের প্রথম সারির একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে সাক্ষাৎকার দেন তিনি।
মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভ্যাক্সিনেশনে পুরস্কার পেয়েছেন। কারণ, আমাদের দেশে বেশিরভাগ টিকাই বিনামূল্যে দেয়া হয়। টিকাটি যখন আমরা বাণিজ্যিকীকরণ করব, তখন এমনও হতে পারে সরকার জনগণকে ফ্রি করে দিয়েছে কিংবা স্বল্প দামে দিচ্ছে।
মহিউদ্দিন বলেন, আমরা যেহেতু উৎপাদক প্রতিষ্ঠান, আমাদের তো খরচ আছে, আমরা তো আর ফ্রি দিতে পারব না। এখন সরকার যদি সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা এই টিকা জনগণকে ফ্রি দেব, সেক্ষেত্রে আমরা হয়তো লাভ না করলাম। আমাদের যে উৎপাদন খরচ, সেটা হয়তো আমরা সরকারের কাছ থেকে নিলাম।
গ্লোবের আবিষ্কার করা টিকা গরিব মানুষও কিনতে পারবে জানিয়ে তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনে আমাদের চেয়ারম্যান তো বলেছেন, সব জায়গায় আমরা প্রোফিট (লাভ) করব না। এটা উৎপাদনে আমাদের যে খরচ, সেটা দিয়েই আমরা দিয়ে দিলাম। সবার নাগালের মধ্যে আমরা দাম নির্ধারণ করব। এতে অতিদরিদ্র মানুষও এই টিকা কিনতে পারবে।
এ টিকা সফল হলে ব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি জানান, এই টিকা সুস্থ মানুষের শরীরে দেয়া হবে। ইনজেকশনের মাধ্যমে মানুষ টিকাটি গ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, আমরা ১০-১২ জন কাজ করেছি। গবেষক দলের প্রধান ড. কাকন নাগ (গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের সিইও) ও ড. নাজনীন সুলতানা (গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের সিওও)। তারা দুজন আমাদের এক্সপার্ট (বিশেষজ্ঞ)। তাদের সুপারভিশনে (তত্ত্বাবধানে) আমরা বাকিরা কাজ করেছি। তারা দুজনই কানাডায় আটকা পড়েছেন।
কানাডা থেকে তারা কীভাবে নেতৃত্ব দিলেন সে প্রসঙ্গে মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, এখন তো গ্লোবালাইজেশনের (বিশ্বায়নের) যুগ। আজকের সংবাদ সম্মেলনেও তাদের যুক্ত রেখেছিলাম। এখন তো আর ফিজিক্যালি (শারীরিক) যাওয়া লাগে না।
টিকা বাজারে আসতে কতদিন লাগতে পারে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, আমরা যদি কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতার শিকার না হই, তাহলে ডিসেম্বরের মধ্যে বাজারে আনতে পারব। মানে ছয় মাস লাগতে পারে।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে থাকা তাদের আবিষ্কারের টিকা এরই মধ্যে তিনটি খরগোশের দেহে প্রয়োগ করে ইতিবাচক অগ্রগতি পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ বলেন, করোনার টিকা তৈরি হয়েছে বলেই তা প্রাণীর দেহে প্রয়োগ করা গেছে।
প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা দলের প্রধান আসিফ মাহমুদ বলেন, টিকাটি খরগোশের ওপর প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা গেছে। এখন পরবর্তী প্রটোকল তৈরির কাজ চলছে। এ কাজ শেষ করেই আনুষ্ঠানিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেব।