নরসিংদী জেলা কারাগারে মুক্তিযোদ্ধা কারাবন্দি’র মৃত্যু
বাণী রিপোর্ট: নরসিংদী জেলা কারাগারে জয়নাল আবেদীন (৬০) নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা কারাবন্দির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৪ মার্চ) দিবাগত রাতে কারাগারে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়ার কিছুক্ষণ পর চিকিসৎক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন রায়পুরা উপজেলার হাসিমপুর গ্রামের মৃত শামসু মিয়ার ছেলে।
নরসিংদী জেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিসৎক শওকত হাসান শাকিল জানান, রাত ২টা ৩৬ মিনিটে মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন জেলা কারাগারের লোকজন। পরে চিকিৎসা চলাকালে তার মৃত্যু হয়।
নরসিংদী জেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মিজানুর রহমান বলেন, নিহত জয়নাল আবেদীন প‚র্ব থেকে হার্ট এর রোগী এবং শরীরে ডায়াবেটিস ছিল। আমি নিজেও তাকে চিকিৎসা দিয়েছিলাম। তবে কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা ময়না তদন্ত শেষে বলা যাবে।
এদিকে নিহত জয়নাল আবেদীনের মেয়ের জামাই মামুন জানায়, আমার শ্বশুর নির্দোষ ছিলেন, তাকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। অবশেষে তাকে কারাগারেই শেষ বিদায় নিতে হলো।
জানা যায়, ২০১৮ সালের একটি হত্যা মামলায় সন্দেহজনকভাবে তাকে আটক করে নরসিংদীর গোয়েন্দা পুলিশ। এ মামলার অপর আসামী নাসির (২২) এর জবানবন্দিতে শিশু মামুন (৭) হত্যার ম‚ল পরিকল্পনাকারী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল মাস্টারকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলার প্রেক্ষিতে ২১ মাস যাবৎ নরসিংদী জেলা কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি।
তৎকালীন নরসিংদীর পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন (২০১৮ সালের ১১ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ২০১৮ সালের ২০ জুন রায়পুরা উপজেলার হাসিমপুর এলাকার প্রবাস ফেরত সুজন মিয়ার ৭ বছর বয়সী ছেলে মামুন খেলতে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। তিন দিন পর (২৩ জুন ২০১৮) দুপুরে প্রতিবেশী জয়নাল মাস্টারের তিনতলা বাড়ির ছাদ থেকে শিশু মামুনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সুজন মিয়া বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটির তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় প্রথমে হত্যায় জড়িত সন্দেহে মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল মাষ্টারকে আটক করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় জড়িত গ্রেফতারকৃত ম‚ল আসামি নাসিরকে করা হলে সে জানায়, প্রতিবেশী জয়নাল মাস্টারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের জন্যই শিশুটিকে অপহরণ করা হয়। দুইদিন অন্যত্র অভুক্ত রাখার পর শিশু মামুনকে হত্যা করা হয়েছে। পরে সন্দেহ থেকে বাঁচতে প্রতিবেশী মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল মাস্টারের বাড়ির ছাদে লাশ রেখে দেয়া হয়।