নরসিংদীর পলাশে পরকিয়া প্রেমিক খুন, ৫দিন পর সেফটি ট্যাংক থেকে লাশ উদ্ধার
নিহত কাইয়ুম
বাণী রিপোর্ট: নরসিংদীর পলাশে পরকিয়া প্রেমিকের অর্ধগলিত লাশ প্রেমিকার বাড়ির সেফটি ট্যাংক থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রেমিকার শ্বশুর-শাশুড়িসহ সন্দেহভাজন ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় পলাশ উপজেলার ভাগ্যেরপাড়া গ্রামের মোকারমের বাড়ির সেফটি ট্যাংকের ভেতর থেকে পরকিয়া প্রেমিক আল কাইয়ুম নিপুণ (৩৩) এর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত কাইয়ুম নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার গোতাশিয়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে। মফিজ উদ্দিন প্রবাসে থাকায় ছেলে কাইয়ুম তার মা, ভাই, স্ত্রী ও ১১ বছরের কন্যা সন্তানকে নিয়ে নরসিংদী পৌর শহরের ভেলানগর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, কাইয়ুমের সাথে পলাশের ভাগ্যেরপাড়া গ্রামের মোকারমের স্ত্রী এক সন্তানের জননী জেসমিন আক্তার সুমির পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ৩ মার্চ সন্ধ্যায় পৌর শহরের ভেলানগরের বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় প্রেমিক আল কাইয়ুম নিপুণ। নিহতের ভাই জাহিদুল ইসলাম অপু জানান, কাইয়ুম গত ৩ মার্চ সন্ধ্যায় বন্ধুর কাছে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। পরে তাকে না পেয়ে ৪ মার্চ নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি।
জিডির সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার সন্ধ্যায় নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহেদ আহমেদ এর নেতৃত্বে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. নাসির উদ্দিন ও নরসিংদী মডেল থানার ওসি সৈয়দুজ্জামানসহ পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে কাইয়ুমের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহেদ আহমেদ জানান, নিখোঁজের পর নিহতের মোবাইল ফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তদন্তে নামে পুলিশ। কললিস্টে মোকারমের স্ত্রী সুমির সাথে একাধিক মোবাইল কলের যোগসূত্র পাওয়া যায়। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুমীকে আটক করা হয়। পরে সুমির দেয়া তথ্যমতে ওই বাড়ির সেফটি ট্যাংকের ভিতর থেকে কাইয়ুমের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সুমীসহ ৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
পরকিয়া প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমী
এদিকে পরকিয়া প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমী পুলিশ ও আদালতের নিকট তার প্রেমিক কাইয়ুমকে হত্যার লোমহর্ষক জবানবন্দী প্রদান করে। পরকীয়া সম্পর্ক চলাকালীন নিহত কাইয়‚ম তার মোবাইলে তাদের শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে রাখে। ধারণকৃত ভিডিও পরিবারকে দেখানোসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে গত ৬ মাস যাবৎ জেসমিন আক্তার সুমির কাছ থেকে টাকা-পয়সা নেয়া শুরু করে প্রেমিক কাইয়ুম। ঘটনার দিন গত ৩ মার্চ রাতে কাইয়‚ম শারীরিক সম্পর্ক ও টাকা আদায় করতে সুমির বাড়িতে যায়। এ সময় প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমি ঘুমের ঔষধ মিশানো পানি পান করিয়ে কাইয়‚মকে অচেতন করে। একপর্যায়ে বিছানার চাদর দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহটি বস্তাবন্দি করে বাড়ির সেফটি ট্যাংকে লুকিয়ে রাখে।
পরে পুলিশ ঘটনার ৫দিন পর সোমবার সন্ধ্যার দিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।