পলাশে ক্যাপিটাল পেপার অ্যান্ড পাল্প ও ক্যাপিটাল বোর্ড কারখানায় বকেয়া বেতন রেখেই ছাঁটাই ২০০ শ্রমিক-কর্মচারী
বাণী রিপোর্ট: শ্রমিক কর্মচারীদের ৭ মাসের বেতন ও ৮ মাসের ওভার টাইম বকেয়া রেখেই নরসিংদীর পলাশে ক্যাপিটাল পেপার অ্যান্ড পাল্প ও ক্যাপিটাল বোর্ড কারখানার প্রায় ২০০ শ্রমিক-কর্মচারীকে ছাঁটাই করে দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। ৪ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার রাতে কারখানার চেয়ারম্যান বিকল্প-ধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানের স্বাক্ষরিত এক নোটিশ কারখানার প্রধান গেটে ঝুলিয়ে দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ।
নোটিশে জানানো হয়েছে, কারখানায় দীর্ঘ মেয়াদে পূর্ব পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হওয়ায় ওই কারখানায় প্রয়োজন অতিরিক্ততার কারণে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কারখানার সকল শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদেরকে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ থেকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এ ছাড়া শ্রমিক-কর্মচারীদের ছাটাই সংক্রান্ত সকল পাওনাদি শ্রম আইন মোতাবেক চলতি বছরের ৯ আগষ্ট ২০২০ তারিখের ভিতরে বিভিন্ন মাসে প্রদান করা হবে বলে নোটিশে জানানো হয়।
সরেজমিনে কারখানায় গিয়ে জানা যায়, গত ২ ডিসেম্বর ২০১৯ থেকে ২ জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত ৩২ দিনের জন্য গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় এবং মালিকের নিয়ন্ত্রণ বর্হিভূত কারণ দেখিয়ে কারখানার ম্যানেজার স্বদীপ কুমার মজুমদার স্বাক্ষরিত এক নোটিশে কারখানাটি লে-অফ ঘোষনা করেছিল মিল কর্তৃপক্ষ। এদিকে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবীতে ও ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে মিল গেটে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করছে।
বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা জানান, ঈদুল আজহার ছুটিতে মিলের উৎপাদন বন্ধ থাকার পর আর মিলে উৎপাদন চালু করেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। প্রথমে কারখানার উৎপাদন বন্ধ, পরে লে-অফ এবং এবার সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা না দিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করে ছাঁটাই করার কারণে কারখানায় কর্মরত ২০০ জন শ্রমিক-কর্মচারী হতাশ হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন যাবত বেতন-ভাতা না পেয়ে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন তারা।
মিলের শ্রমিক ফিরোজা আক্তার জানান, বেতন-ভাতা না পেয়ে আমরা অতি কষ্টে ছেলে-মেয়ে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। তাছাড়া অনেকে রিক্সা ও ভ্যান চালিয়ে তাদের সংসার চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে ডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাবের-উল-হাই খান বলেন, বিরাট সমস্যার মধ্যে পড়েছেন মিলের ছাঁটাইকৃত শ্রমিক-কর্মচারীরা। বেতন ভাতা পরিশোধ না করে এবং হঠাৎ করে শ্রমিক-কর্মচারীদের ছাঁটাই করা ঠিক হয়নি।
এ ব্যাপারে মিলের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আমিনুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা এ ছাঁটাইয়ের নোটিশ দিয়েছি। এর বাইরে আর কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী শ্রমিক কর্মচারীরা তাদের দুঃখ-দূর্দশা লাঘবে নরসিংদী জেলা প্রশাসনসহ সংম্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।